সর্বশেষ আপডেট

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

 

শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম – 





শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম: করোনা ভাইরাসের করাল গ্রাসে বন্ধ হয়ে আছে দেশের সকল স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের পাঠদান অব্যাহত রাখতে সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশন সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশে সরকারসহ শিক্ষকরা নিজ উদ্যোগে ক্লাস পরিচালনা করার চেষ্টা করে আসছে। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রী কর্তৃক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পরবর্তী শ্রেণীতে প্রমোশন দেওয়ার ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম অনুসরণ করে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া এবং সেগুলো সম্পন্ন করে জমা দেওয়ার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেছেন। আজকে শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম নিয়ে আলোচনা করবো।

অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া ও মূল্যায়ণ প্রসঙ্গে মাউশি ৩১ অক্টোবর ২০২০ একটি নির্দেশনা দিয়েছেন তা দেখুন-

শিক্ষার্থীদের পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে প্রমোশন’ দেওয়া জন্য বাসায় বসে শিক্ষার্থীদের এসাইনমেন্ট দিয়ে সেগুলো যথাযথ মূল্যায়নের মাধ্যমে পরবর্তী শ্রেণীতে প্রমোশন দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। ‌

এই লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক সকল স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জন্য ৩০ দিনের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রণয়ন করেছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তক্রমে প্রণীত ৩০ দিনের এই সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের আলোকে শিক্ষার্থীদের কে অ্যাসাইনমেন্ট করতে দেওয়া হবে এবং সে অনুযায়ী তারা কাজ সম্পন্ন করে শিক্ষকদের কাছে জমা দিবেন।

একজন শিক্ষার্থীকে পরবর্তী শ্রেণিতে প্রোমোশন পেতে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে। এখানে মােট নম্বরের একটি অংশও বরাদ্দ থাকে। ভাল নম্বর পেতে হলে অ্যাসাইনমেন্ট সুন্দর হওয়া বাঞ্ছনীয়।

কিন্তু অ্যাসাইনমেন্ট সম্পর্কে অনেক শিক্ষার্থী যথাযথ অবগত নয়। এজন্য রয়েছে নির্দিষ্ট পদ্ধতি কাঠামাে এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ কৌশল। সেগুলাে নিয়েই আমাদের এ আয়ােজন।

অ্যাসাইনমেন্ট-এর প্রয়ােজনীয়তা:

বর্তমানে কোভিড-১৯ এর কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠ মূল্যায়ন সহ পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য অ্যাসাইনমেন্ট করে সেটা সংশ্লিষ্ট বিষয় শিক্ষকের নিকট জমা দিবেন।

সংশ্লিষ্ঠ বিষয় শিক্ষক সে অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়ন করে শিক্ষার্থীদের নম্বর প্রদান করবেন যা পরবর্তী বছরে নতুন শ্রেণিতে প্রমোশন পাওয়ার ব্যাপারে সহযোগিতা করবে।

এছাড়াও অ্যাসাইনমেন্ট এর অন্যান্য গুরুত্ব রয়েছে-

  • অ্যাসাইনমেন্ট পাঠ্য বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলাে সম্পর্কে নির্দেশনা প্রদান করতে পারে।
  • কোন বিশেষ পাঠ্য বিষয়কে সমালােচকের দৃষ্টি নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে পড়তে উৎসাহিত করে।
  • যে সব আনুষঙ্গিক বই, পত্র-পত্রিকা, সাময়িকী, গবেষণা প্রবন্ধ পাওয়া যায় সেগুলাে বিস্তারিতভাবে
    পড়ে শিক্ষার্থীরা প্রয়ােজনীয় বিষয়গুলাে নির্বাচন করতে পারেন।
  • কোনাে বিষয় সম্পর্কে তার নিজস্ব চিন্তাধারা প্রয়ােগ করে চিন্তার স্বপক্ষে সাক্ষ্য ও যুক্তি প্রদান এবং বিভিন্ন মতামত মূল্যায়ন করে নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেন।
  • শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে অনুপ্রাণিত হন এবং আত্মবিশ্বাস অর্জন করেন।

অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়মাবলি:

১. শুরু করবেন কীভাবে?

সংশ্লিষ্ট বিষয় শিক্ষক শিক্ষামন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত নীতিমালার আলোকে শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত যেকোন একটি বিষয়ের উপর অ্যাসাইনমেন্ট করতে দিবেন।

অ্যাসাইনমেন্ট পাওয়ার পরই শিক্ষার্থীকে লেখার কাজে হাত দিতে হবে। তার আগে অবশ্যই বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।

অ্যাসাইনমেন্ট করার জন্য তথ্যের উৎস: 

সাধারণত শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদের তাদের পাঠ্য বই থেকে অ্যাসাইনমেন্ট করার কাজ দিবেন; যা শিক্ষার্থীরা পাঠ্য বইয়ের বিভিন্ন অধ্যায় বা টপিক পড়লে সহজেই করে নিতে পারবে।

তাছাও অ্যাসাইনমেন্ট করার জন্য নিন্মোক্ত তথ্য উৎস ব্যবহার করা যেতে পারে-

  • শিক্ষক কর্তৃক মনােনীত বই
  • সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সহায়ক বই
  • পত্র-পত্রিকা, সাময়িকী, জার্নাল
  • ইন্টারনেট র অভিজ্ঞজনের মতামত
  • সংশ্লিষ্ট বিষয়ের অ্যাসাইনমেন্ট র শিক্ষকের গাইড লাইন এবং সংসদ টিভির ক্লাস লেকচার

লেখা শুরুর আগে যা জানতে হবে-

প্রথমেই জানা উচিত অ্যাসাইনমেন্ট অনেকটা গবেষণাপত্রের মত। আপনার সংগৃহীত তথ্য এবং বাস্তবতা মিলিয়ে অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে হবে।

যেমন ধরুন, আপনার অ্যাসাইনমেন্ট-এর বিষয় হলাে বাংলাদেশে মাধ্যমিক বিদ্যালয় সমূহের প্রশাসন ব্যবস্থা : একটি পর্যালােচনা”

এ বিষয়ে আপনি যতটা সাহায্য পাবেন আপনার সংগৃহীত তথ্য হতে তার চেয়ে বেশি পাবেন বাস্তবতা থেকে।

এ ক্ষেত্রে স্কুলগুলাের প্রশাসন ও সরকারের শিক্ষাসংক্রান্ত প্রশাসন হবে আপনার উৎস। আপনার লেখার ধরন ও হবে অন্যরকম।

এখানে আসবে- 

  • বর্ণনা, * সচিত্র ব্যাখ্যা, * বিশ্লেষণ, * সমাধান, * উন্নতবিশ্বের উদাহরণ,
  • প্রশাসনের ভূমিকা, * শিক্ষকদের ভূমিকা, * শিক্ষার্থীর ভূমিকা, * সুপারিশ

অ্যাসাইনমেন্ট-এর রূপরেখা-

অ্যাসাইনমেন্টের রূপরেখার সর্বজন স্বীকৃত কোনাে কাঠামাে নেই। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানেরই তাদের নিজস্ব রূপরেখা বা কাঠামাে থাকতে পারে। আপনার প্রতিষ্ঠানে অ্যাসাইনমেন্টের জন্য যদি নির্দিষ্ট কোনাে রূপরেখা থাকে তা অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

তবে সাধারণভাবে যে বিষয়গুলাে আপনার লিখতে হবে তা-

ভূমিকা : এখানে সমস্যার একটি সুস্পষ্ট বর্ণনা থাকবে। অ্যাসাইনমেন্টে ব্যবহৃত শব্দ ও পদগুলাের সংজ্ঞা থাকবে এবং সমস্যা বা অ্যাসাইনমেন্টের সীমাবব্ধতা এখানে লিখতে হবে। তাৎপর্য ও পটভূমি এর মধ্যে থাকবে।

এখানে আনুষঙ্গিক বই পত্রের পর্যালােচনা থাকতে পারে, সমস্যা বা বিষয়টির পরিধি বর্ণিত হতে পারে। ভূমিকায় পুরাে অ্যাসাইনমেন্ট সম্পর্কিত মােটামুটি একটি ধারনা থাকবে।


মূল অংশ: এই অংশে যুক্তিতর্কের মাধ্যমে বিষয়টির উত্তরণ ঘটবে। ভূমিকায় বর্ণিত সমস্যাটির প্রগতিশীল সমাধানের জন্য এখানে বিস্তারিত লেখা হয়। পুরাে অ্যাসাইনমেন্টের মূল অংশ এখানে উপস্থাপিত হবে।

এই অংশটিকে সচল রাখার জন্য কোনাে অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে হারিয়ে গেলে চলবে না।

উপসংহার : এখানে পর্যবেক্ষণ, গবেষণা নির্বাচিত বিষয়টির ফলাফল উপস্থাপন করবে।

এতে সমস্যার সমাধান ও সমস্যার সমাধানের পথনির্দেশ থাকতে পারে, সাথে সাথে সুপারিশও থাকবে।

অ্যাসাইনমেন্ট-এর শিরােনাম পৃষ্ঠা :

অ্যাসাইনমেন্ট-এর জন্য শিরােনাম পৃষ্ঠা গুরুত্বপূর্ণ। এখানে লেখার ক্ষেত্রে আসবে-

  • ক. বিষয়ের নাম;
  • খ. লেখকের নাম;
  • গ. শিক্ষকের নাম;
  • ঘ. কোর্সের নাম;
  • ঙ. বিভাগের নাম;
  • চ. বিদ্যালয়, প্রতিষ্ঠানের নাম;
  • ছ. লেখা জমা দেয়ার তারিখ;

অ্যাসাইনমেন্টের প্রয়ােজনীয় কিছু বিষয় :

  • শিরােনাম পৃষ্ঠার পর বিস্তারিত সূচিপত্র দিতে পারেন
  • অ্যাসাইনমেন্ট-এর লেখা হবে অনেকটা গবেষণাধর্মী
  • তবে লেখার ভাষা গুরুগম্ভীর হবে না
  • অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে গবেষকের মন কিংবা অনুসন্ধিৎসু মনে লিখতে হবে। গ্রুপ স্টাডি করেও অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে পারেন
  • শুধু নম্বর পাবার জন্যই নয় বাস্তবতা তুলে ধরতে যথাসম্ভব সুন্দর উপস্থাপনা প্রয়ােজন
  • আপনার শিক্ষক যে বিষয়টি চাচ্ছেন সেটি আপনি কীভাবে এনেছেন দেখুন
  • আপনার অ্যাসানমেন্টেই হতে পারে আপনার সৃজনশীলতার প্রকৃষ্ট দৃষ্টান্ত

শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু নির্দেশনা:

১ নভেম্বর-২০২০ ইং তারিখ হতে মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এর নির্দেশনা মােতাবেক, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য বিষয় ভিত্তিক এসাইন্টমেন্টের মাধ্যমে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া শুরু হবে। একমাস ব্যাপী মূল্যায়ন প্রক্রিয়া চলবে।

এই একমাস প্রত্যেককে নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করে মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ গ্রহন নিশ্চিত করতে হবে।

উক্ত সময়ে কেউ বাড়ির বাহিরে (আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে) কোনক্রমেই যাওয়া যাবে না।

মূল্যায়ন পরীক্ষা (এসাইন্টমেন্ট) তৈরির জন্য যা আগে তৈরি করে রাখতে হবে এবং যা মনে রাখতে হবে, তা হলাে

  • A4 সাইজের কাগজের খাতা
  • খাতার কভার পৃষ্ঠায় বিদ্যালয়ের নাম, নিজের নাম, শ্রেণি, শাখা, রােল নম্বর, বিষয়, তারিখ সাইন কলম দিয়ে সুন্দর করে লিখতে হবে।
  • প্রতি বিষয়ের জন্য আলাদা আলাদা খাতা একই নিয়মে তৈরী করতে হবে।
  • খাতায় কোন ভাবে লাল কালির কলম ব্যবহার করা যাবে না।
  • সব গুলাে খাতা একই সাইজের হতে হবে।
  • হাতের লেখা সুন্দর ও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হতে হবে।
  • অন্য জনের থেকে দেখে এসাইন্টমেন্ট তৈরি করা যাবে না।
  • নিজের অর্জিত জ্ঞানের মাধ্যমে এসাইন্টমেন্ট তৈরি করতে হবে যাতে তােমার শিখন ফল প্রতিফলিত হয়।
  • শিক্ষকের দেয়া নির্ধারিত তারিখে লিখিত খাতা বিদ্যালয়ে জমা দিতে হবে।
  • জমাদানের ব্যর্থতার জন্য কোন প্রকার সুপারিশ, অনুরােধ, আবেদনপত্র গ্রহন করা হবে না।

শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট সংক্রান্ত এই নির্দেশিকাটি ডাউনলোড করে নিন। 

Post a Comment

0 Comments